ওমর ফারুক মুন্না'র কালজয়ী ইতিহাস !

ওমর ফারুক মুন্না'র কালজয়ী ইতিহাস !


মোশারফ হোসেন হৃদয়:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ এর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক মুন্না । তিনি পুরাতন ঢাকা পাটুয়াটুলি জন্মগ্রহন করেন।জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেন এবং বর্তমানে জবিতে ইংরেজী ভাষা শিক্ষা কোর্সে অধ্যায়নরত। রাজনৈতিক কারনে মামলার জালে আটকা পড়েছে তার জীবন। বিএনপির চেয়ারপারসন  বেগম খালেদা জিয়া ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আস্থাভাজন পরীক্ষিত এই ছাত্রনেতা। দলের আন্দোলন সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব্য দেওয়ায় তার উপর হামলা মামলা ও নির্যাতন বেড়ে যায়। গত কাল তার সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব বিষয় তুলে ধরেন তিনি।

তিনি বলেন, স্কুল জীবন থেকেই ছাত্র রাজনীতি করতে ভাল লাগতো। ভাললাগা থেকে জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। আন্দোলনের মিছিলে স্লোগানও ধরতেন সামনে থেকে। বন্ধুদের আড্ডায়ও ছিলেন মধ্যমণি। স্কুল জীবনেই সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন ছাত্র রাজনীতিতে। লেখাপড়ার পাশাপাশি রাজনীতিই হয়ে উঠে তার কাছে ধ্যান-জ্ঞান। তবে রাজনীতির পাশাপাশি পড়াশোনাও সক্রিয়ভাবে চালিয়ে যান। এসএসসি পাস করে ভর্তি হন কবি নজরুল সরকারি কলেজে। তার রাজনীতির গন্ডি এলাকা থেকে নিয়ে যান কলেজপাড়ায়ও। রাজনীতি যেন তার রক্তে মিশে যায়। নিয়মিত মিছিল-মিটিংয়ের কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠে তিনি। কবি নজরুল কলেজ থেকে এইচ এসসি পাস করে ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ( ১৯৯৮-৯৯) শিক্ষা বর্ষে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ভর্তি হওয়ার পরে আরো সক্রিয় হন ছাত্র রাজনীতিতে। প্রথমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ডিপার্টমেন্টের ছাত্রদলের কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য হন ওমর ফারুক মুন্না। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি কমিটিতে তাকে পদ বঞ্চিত করা হয়। তার পরেও তিনি থেমে থাকেননি, নিরলস ভাবে কাজ করে গেছেন দলের জন্য। জগন্নাথ বিশ্ব বিদ্যালয় থিয়েটারেও সক্রিয় ছিলেন মুন্না। বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটারের সভাপতি ছিলেন। ওয়ান-ইলেভেন সরকার আমলে দলের বিপর্যয়ে ছিলেন মূলস্রোতে। পদ বঞ্চিত থাকা সত্যেও দৃঢ়চেতা ও সাহসী নেতৃত্বের পুরস্কার পেয়েছিলেন মুন্না। ২০১২ সালের দিকে তাকে দায়িত্ব্য দেয়া হয় জগ্ননাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদে। মিছিলে মুক্ত ঝড়া স্লোগান আর সাহসিকতায় কাল হয়ে দাড়ায় সুদর্শন এই ছাত্রনেতার। আন্দোলন-সংগ্রামে অন্যতম ভুমিকা রাখার কারণে তার উপর বয়ে যায় মামলার ঝড়। ২০১২ সাল থেকেই শুরু হয় ফেরারি জীবন। এরপর থেকে আর নিজের বাসায় ঘুমাতে পারেননি এই ছাত্রনেতা।প্রায় প্রতিদিনই তার খোঁজে বাসায় যায় পুলিশ। গ্রেপ্তার এড়াতে থাকেন কৌশলী অবস্থানে। কখনও আত্মীয়-স্বজন, আবার কখনও বন্ধুবান্ধবের বাসায়। চলাফেরাও করতে হয় হিসেব কষে। ২০১৩ ও ২০১৪ আন্দোলনে মাঠে সক্রিয় ছিলেন ফেরারী এই ছাত্রনেতা। মামলায় ফেরারি হওয়ায় তার বাসার সব মালামাল ক্রোক করতে পুলিশ যায় তার গ্রামের বাড়িতে। তাকে না পাওয়ায় পরবর্তিতে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য রাতের বেলায় বিশেষ অভিযান চালানো হয় তার বোনের বাসায়। কিন্তু পুলিশ তাকে না পেয়ে তার বোনের বাসায় ভাংচুর চালায়। একই রাতে অভিযান চালানোর হয় তার গ্রামের বাড়িতেও। ওই বাসায়ও একইভাবে ভাঙচুর করা হয়। রাজনীতির এমন বর্বরতম ঘটনায় হতবিহ্বল হয়ে পড়েন তার গোটা পরিবার ।২০১৫ সালের শুরুর দিকে দ্বিতীয়দফা সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় একের পর এক মামলার ঝড় বয়ে যায় তার উপর। পূরণ হয় মামলার প্রায় হাফ-সেঞ্চুরি। চার্জশিটভুক্ত রয়েছে প্রায় ৩৭টির মত। প্রায় সব মামলায় রয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। দু-দফা আন্দোলনে তার হাতে গড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই কর্মী গুম হয়ে যায়। মারাত্বক ভাবে আহত হয় আরো অনেক সহকর্মী ও ছোট ভাই। ওমর ফারুক মুন্না বলেন, শুধু রাজনীতি করার অপরাধেই আমার বিরুদ্ধে প্রায় ৫০ টির মত মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাঁচ বছর ধরে ফেরারি জীবন-যাপন করছি। মাসে একদিনও বাবা-মার সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হয়ে উঠেনা। বর্তমান রাজনীতিতে মাঠে সক্রিয় আছেন তিনি। মামলার ভয় উপেক্ষা করে রাজপথে অগ্রনায়কের ভূমিকা পালন করছেন। তিনি বলেন, মনে হয় নিজ দেশে আমি প্রবাসী।

Comments

Popular posts from this blog

বালুয়াকান্দি সূর্য্যমুখী সংগঠনের এক শ্রেষ্ঠ অর্জন

নায়ক আসিফ নায়িকা হয় জয়া না হয় মাহি!!!